চোখের যত্ন
Freepik freepik

চোখের যত্ন নিবেন কিভাবে।

চোখের যত্ন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, কারণ এটি আমাদের দৈনন্দিন জীবনে সবচেয়ে বেশি ব্যবহৃত অঙ্গগুলির মধ্যে একটি। সঠিক যত্ন নিলে চোখ সুস্থ ও উজ্জ্বল থাকে। এখানে চোখের যত্নের কিছু সহজ ও কার্যকরী উপায় দেওয়া হলো:

১. নিরাপদভাবে চোখ পরিষ্কার রাখুন

  • হালকা জল দিয়ে চোখ ধুয়ে ফেলুন: দিনে কয়েকবার হালকা পানিতে চোখ ধুয়ে নিলে চোখ পরিষ্কার থাকে এবং ক্লান্তি কমে।
  • মেকআপ পরার পর মেকআপ পরিষ্কার করুন: যদি মেকআপ করেন, তবে রাতের সময় মেকআপ ভালোভাবে মুছে ফেলুন, বিশেষ করে চোখের মেকআপ। এটি চোখের পাতা এবং চোখের চারপাশের ত্বক সুস্থ রাখে।
চোখের যত্ন

২. অতিরিক্ত পরিশ্রম এড়ানো

  • কম্পিউটার এবং মোবাইল স্ক্রীন থেকে বিরতি নিন: দীর্ঘ সময় স্ক্রীনে তাকিয়ে থাকার ফলে চোখের ক্লান্তি, শুকিয়ে যাওয়া বা চোখের পেশী ক্লান্ত হতে পারে। প্রতি ২০ মিনিট পর ২০ সেকেন্ডের জন্য চোখের পাতা বন্ধ করে বিশ্রাম নিন বা দূরের কিছু দেখুন।
  • স্ক্রীন টাইম কমান: কাজ বা গেম খেলার সময় স্ক্রীনের দিকে তাকিয়ে থাকলে চোখের মাংশপেশী ক্লান্ত হয়ে পড়ে। স্ক্রীন ব্যবহারের সময় একে একে ১৫-২০ মিনিট ব্যবধানে বিরতি নিন।

৩. প্রতিদিন সঠিক পুষ্টি নিন

  • ভিটামিন এ এবং সি: গাজর, পালং শাক, কুমড়া, কলা, ডিম, মাছ ইত্যাদি ভিটামিন এ সমৃদ্ধ খাবার খেলে চোখের স্বাস্থ্য ভালো থাকে। ভিটামিন সি (লেবু, কমলা, আমলা) চোখের ভেতরের টিস্যু রক্ষায় সাহায্য করে।
  • অ্যান্টি-অক্সিডেন্টস: অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ খাবার (যেমন বেরি, টমেটো, গাজর) চোখের ক্ষতি হতে রক্ষা করে এবং বয়সের সঙ্গে চোখের সমস্যা প্রতিরোধ করে।

৪. প্রতিদিন পর্যাপ্ত ঘুম

চোখের ক্লান্তি দূর করতে এবং চোখের চারপাশের ত্বককে সতেজ রাখতে পর্যাপ্ত ঘুম (৭-৮ ঘণ্টা) খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এটি চোখের স্নায়ু এবং পেশীকে বিশ্রাম দেয়।

৫. সানগ্লাস ব্যবহার করুন

সূর্যের অতিরিক্ত UV রশ্মি চোখের জন্য ক্ষতিকর হতে পারে। তাই বাইরে গেলে সানগ্লাস পরুন, যা UV রশ্মি থেকে চোখকে রক্ষা করবে।

৬. চোখের চারপাশের ত্বককে হাইড্রেট রাখুন

চোখের চারপাশের ত্বক অত্যন্ত পাতলা এবং sensitive। এই অঞ্চলে যথাযথ ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করুন। রাতে হালকা অয়েল বা ক্রিম ব্যবহার করলে চোখের চারপাশের ত্বক নরম ও কোমল থাকবে।

৭. চোখে টান বা চাপ প্রয়োগ না করা

চোখে কখনোই অতিরিক্ত চাপ বা টান প্রয়োগ করবেন না। অতিরিক্ত রগড় বা ঘষার ফলে চোখের ত্বক বা কর্নিয়া ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। চোখে কোনো ধরনের সমস্যা দেখা দিলে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত।

৮. চোখে পানি বা অ্যালার্জি সমস্যা হলে চিকিৎসকের কাছে যান

চোখে অতিরিক্ত পানি পড়া, চুলকানি বা লাল হয়ে যাওয়া যদি ক্রনিক হয়ে যায়, তবে অ্যালার্জি বা অন্য কোনো সমস্যা হতে পারে। এ ক্ষেত্রে চোখের চিকিৎসকের পরামর্শ নেয়া জরুরি।

৯. চোখের ব্যায়াম করুন

চোখের পেশীকে শক্তিশালী এবং সুস্থ রাখার জন্য কিছু সহজ ব্যায়াম করা যেতে পারে:

  • নির্দিষ্ট জিনিসের দিকে তাকিয়ে থাকা: আপনার চোখের সামনে কোনো এক বিন্দু বা বিশদ বস্তু (যেমন পেন্সিল) ২০ সেকেন্ডের জন্য তাকিয়ে রাখুন, তারপর ২০ সেকেন্ডের জন্য চোখ বন্ধ করুন।
  • চোখের পাতা ঘোরানো: চোখের পাতা সবার দিকে (আপ, ডাউন, ডান, বাম) ঘোরানোর অভ্যাস করুন, এতে চোখের পেশী শক্তিশালী হয়।

১০. ভাল আলোতে পড়া বা কাজ করা

অন্ধকার বা খুব ঝাঁঝালো আলোতে পড়াশোনা বা কাজ করা চোখের জন্য ক্ষতিকর হতে পারে। সঠিক আলোর মধ্যে কাজ বা পড়াশোনা করুন যাতে চোখের ওপর চাপ না পড়ে।

১১. চোখের ভিজিট বা চেকআপ

নিয়মিত চোখ পরীক্ষা করানো উচিত, বিশেষ করে যদি আপনার দৃষ্টিশক্তি পরিবর্তন হয় বা কোনো সমস্যা দেখা দেয়। চোখের বিশেষজ্ঞ (অপথ্যালমোলজিস্ট) বা অপটোমেট্রিস্টের কাছে যাওয়া উচিত।

চোখের যত্ন

এই উপায়গুলো নিয়মিত অনুসরণ করলে চোখ সুস্থ ও সতেজ থাকবে এবং দৃষ্টিশক্তি ভাল রাখতে সাহায্য করবে।

More From Author

রাজধানীর যে যে স্থানে কম দামে ডিম পাওয়া যাবে

মোবাইল ফোন প্রযুক্তির ইতিহাস।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *