ঘরবাড়ি ঝকঝকে পরিস্কার রাখার জন্য কিছু টিপস।

ঘরবাড়ি ঝকঝকে
Freepik Freepik

ঘরবাড়ি ঝকঝকে এবং পরিপাটি থাকলে কার না ভালো লাগে। ঘরবাড়ি পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন থাকলে নিজের কাছে দেখতেও ভালো লাগে। ঘরবাড়ি ঝকঝকে এবং পরিপাটি থাকলে মনে প্রশান্তি আসে। সেই সঙ্গে স্বাস্থ্যটাও ভালো থাকে। পরিস্কার পরিচ্ছন্ন এবং সাজানো একটি ঘর মানুষের রুচির পরিচয় বহন করে। কিন্তু প্রতিদিনের ব্যস্ততায় ঘরকে ঝকঝকে পরিষ্কার রাখার ধৈর্য্য অনেকেরই হয় না। ফলে ধীরে ধীরে ধুলার আস্তরণ পরে একসময় তা পরিষ্কার করাও অসাধ্য হয়ে যায়।

ঘরবাড়ি ঝকঝকে রাখার জন্য কিছু টিপস।

১। ঘরের চারপাশ পরিষ্কার

ঘরবাড়ি ঝকঝকে

ঘরের কোনায় কোনায় জমা হতে পারে ঝুল কিংবা মাকড়সার বাসা। যা একে বারেই জমতে দেয়া যাবে না। তাই ঘরের প্রতিটি সামগ্রী পরিষ্কারের জন্য ব্যবহার করতে পারেন আলাদা ন্যাপকিন, ডাস্টার কিংবা তোয়ালে। 
বাজারে পাওয়া যাবে বাহারি রঙের কিংবা বাহারি ডিজাইনের ঘর পরিষ্কারের ন্যাপকিন। তবে কখনোই পুরোনো অপরিষ্কার কাপড় দিয়ে ঘর কিংবা ঘরের কোনো সামগ্রী পরিষ্কার করা ঠিক নয়। ন্যাপকিন, ডাস্টার, তোয়ালে যা-ই ব্যবহার করা হোক না কেন, ঘর পরিচ্ছন্নের জন্য সেটিকেও সাবান কিংবা ডিটারজেন্ট দিয়ে ধুয়ে-মুছে রোদে শুকিয়ে পরিষ্কার করে ব্যবহার করতে হবে। তবেই তো ঘর হবে জীবাণুমুক্ত।

২। আসবাবপত্র পরিষ্কার

আসবাবপত্র পরিষ্কার

 ঘরের কাঠের ভিন্ন ভিন্ন ধরনের আসবাব মোছার জন্য ভিন্ন ভিন্ন ধরনের পরিষ্কার ন্যাপকিন ব্যবহার করতে হবে। যেমন কাঠের চেয়ার, টেবিল, ড্রেসিং টেবিল, শোকেস, ওয়ারড্রোব—এগুলো মোছার জন্য অবশ্যই শুকনো ন্যাপকিন ব্যবহার করতে হবে। ভেজা ন্যাপকিন ব্যবহার করা যাবে না। বিশেষ করে সোফার হাতলে কিংবা চেয়ারের হাতলে চিটচিটে ময়লা হয়ে যায়। এই ময়লাগুলো সহজেই পরিষ্কার করতে পারবেন ফার্নিচার ক্লিনার স্প্রে করে। ফার্নিচার ক্লিনার স্প্রে করে শুকনো কাপড় দিয়ে মুছে ফেললেই দাগ দূর হয়ে যাবে। এছাড়াও নিয়মিত শুকনা কাপড় দিয়ে ধুলো-ময়লা মুছে ফেলতে হবে। আর বোর্ডের ফার্নিচারগুলো কখনোই ভেজা কাপড় দিয়ে পরিষ্কার করা উচিৎ নয়। এতে ফার্নিচারের বোর্ডের ক্ষতি হয়।

৩। কাচ/গ্লাস পরিষ্কার

 নিয়মিত আয়না পরিষ্কার না করার কারণে আয়নায় দাগ হয়ে যায়। ফলে ঘরটাকে বেশ অপরিচ্ছন্ন দেখায়।  আয়না পরিষ্কারের জন্য ব্যবহার করতে পারেন কাচ পরিষ্কারক তরল। এরপর পুরানো খবরের কাগজ ভিজিয়ে লাগিয়ে রাখুন আয়নায়। কিছুক্ষণ পর খবরের কাগজ তুলে পাতলা সুতি কাপড় দিয়ে মুছে ফেলুন। আয়না ঝকঝকে হয়ে যাবে। আর খুব সহজেই আয়না পরিষ্কার করতে চাইলে সুপারশপ বা অনলাইন শপগুলোতে বেশ কিছু গ্লাস ক্লিনার পাওয়া যায়। এগুলো স্প্রে করে আয়না মুছে ফেললে নিমিষেই ঝকঝকে হয়ে যায় আয়না। সে ক্ষেত্রে দেখতেও নতুনের মতো লাগবে কাচের আয়না।

খাবার টেবিলের ওপরের কাচটা মোছার জন্য আলাদা ন্যাপকিন রাখতে হবে। যতবারই খাওয়া হবে, খাবার পরপরই ডাইনিং টেবিলের কাচ মুছে ফেলতে হবে। তা না হলে দাগ পড়ে যাবে। পারটেক্সের টেবিল শুকনো পরিষ্কার ন্যাপকিন দিয়ে মুছে ফেলতে হবে।

৪। মেঝে পরিষ্কার

বাসা বাড়ি প্রতিদিন মোছা হলেও মেঝে ঝকঝকে হয়না এই অভিযোগ অনেকের । দীর্ঘদিন এমন হলে মেঝের ওপর কালচে দাগ পড়ে যায়। ফলে ঘরের দেওয়াল, আসবাবপত্র সুন্দর হলেও, ঘরের মেঝে সব সাজগোজকে মাটি করে দেয়। অনেকেই মনে করেন, মার্বেলের মেঝে বা মোজাইকের মেঝেতে এই সমস্যা একেবারেই হয় না। রোজ ফ্লোর ক্লিনার দিয়ে ঘর মোছার পর, একটা নরম তোয়ালে বা নরম কাপড় দিয়ে শুকনো করে ফের ঘর মুছে নিন। ঘর মোছার পানিতে সামান্য ভিনিগার মিশিয়ে নিন। এতে মেঝের কালো দাগ সহজেই দূর হবে। সাদা মার্বেলের মেঝে থেকে হলদেটে ভাব দূর করতে তারপিন তেলে সামান্য লবণ  মিশিয়ে ভালো করে মুছে নিন। এতে দেখবেন খুব দ্রুত ঘর ঝকঝকে হয়ে যাবে। ঘর মুছতে ব্যবহার করুন সুতির কাপড়। দেখবেন ঘেরে মেঝে ঝকঝকে হয়ে উঠবে। ঘর মোছার পানিতে নিমপাতা সেদ্ধ করা পানি মিশিয়ে নিন। এতে মেঝে যেমন ঝকঝকে হবে, তেমনি মশা, মাছির উপদ্রব থাকবে না।

৫। ওয়াশরুম পরিষ্কার

বাথরুমের কমোড, হ্যান্ড স্প্রে এই স্থানগুলোকে সবসময় জীবাণুমুক্ত রাখা উচিৎ। আর তাঁর জন্য নিয়মিত টয়লেট ক্লিনার এবং ব্রাশ দিয়ে ভালোভাবে পরিষ্কার করা উচিৎ টয়লেট। এছাড়াও বেসিন, বাথটাব, সাবানদানী এই স্থানগুলোও বেশ তাড়াতাড়ি ময়লা হয়ে যায়। আর তাই সপ্তাহে অন্তত ২বার করে এই স্থানগুলো ভালো করে পরিষ্কার করা উচিৎ। অনেকেরই বাথরুমে গাছ থাকে। যদি পানির গাছ হয়ে থাকে তাহলে পানিটা নিয়মিত বদলানো উচিৎ। নিয়মিত পানি বদলে না দিলে মশা এবং পোকামাকড় হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। সেই সঙ্গে বাথরুমের ড্রেন দিয়ে সপ্তাহে ৩/৪ দিন ফুটন্ত গরম পানিতে বেকিং সোডা মিশিয়ে ঢেলে দিন। এতে বাথরুমে পোকামাকড়ের উপদ্রব অনেকটাই কমে যাবে।

৬। রান্নাঘর পরিষ্কার

রান্নাঘরে যেহেতু আঠালো ভাব থাকে, তাই রান্নাঘরের চুলা, কেবিনেট এসব পরিষ্কারের জন্য আলাদা ন্যাপকিন রাখতে হবে। কখনোই চুলা কিংবা চুলার আশপাশে মোছার ন্যাপকিন দিয়ে কেবিনেট মোছা যাবে না, তাহলে আঠালো ভাব কিংবা কালো দাগ হয়ে যাবে। রান্নাঘরে রান্নার সময় হাত মোছার জন্য আলাদা পরিষ্কার তোয়ালে রাখতে হবে। থালাবাসন ধোয়ার পরে সেগুলো শুকনো ন্যাপকিন কিংবা নরম পরিষ্কার তোয়ালে দিয়ে মুছে তারপর র্যা কে রাখতে হবে, তা না হলে পানি জমে দাগ বসে যাবে। রান্নাঘরের চুলা, চুলার আশপাশ মোছার ন্যাপকিন সপ্তাহে তিন-চার দিন পরপরই ধুয়ে রোদে শুকাতে দিতে হবে। রান্নাঘরের কেবিনেট পরিষ্কারের ন্যাপকিন সপ্তাহে অন্তত দুই দিন সাবান-পানি দিয়ে ধুয়ে পরিষ্কার করে রোদে শুকিয়ে রাখতে হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *